ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিষেক: ঐতিহ্যের বাইরে নতুন আয়োজনে ৪৭তম প্রেসিডেন্ট
- By Jamini Roy --
- 18 January, 2025
প্রতি চার বছর পরপর যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্টের অভিষেক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট আনুষ্ঠানিকভাবে এই দিনে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। সাধারণত এই অনুষ্ঠান বেশ জমকালো এবং খোলাস্থানে হয়। তবে ২০ জানুয়ারি ডোনাল্ড ট্রাম্প ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিতে যাচ্ছেন এক ভিন্ন আয়োজনে।
ঐতিহাসিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টদের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান খোলা আকাশের নিচে ক্যাপিটল ভবনের সামনে হয়। তবে এবার তীব্র শীতের কারণে অনুষ্ঠানটি ক্যাপিটল হিলের রোটুন্ডা নামক অংশে অনুষ্ঠিত হবে। শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) ট্রাম্প নিজেই এ ঘোষণা দেন।
নিজের মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যালে’ ট্রাম্প লেখেন, "দেশজুড়ে আর্কটিক ব্লাস্ট চলছে। এ কারণে অভিষেক অনুষ্ঠানের ভাষণ, প্রার্থনা এবং অন্যান্য কার্যক্রম ক্যাপিটল রোটুন্ডায় করার নির্দেশ দিয়েছি।"
মার্কিন আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, ওয়াশিংটন ডিসির তাপমাত্রা হিমাঙ্কের অনেক নিচে নেমে যেতে পারে। ফলে খোলা আকাশের নিচে অনুষ্ঠান আয়োজন ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।
প্রায় ৪০ বছর পর ক্যাপিটল ভবনের ভেতরে প্রেসিডেন্টের অভিষেক অনুষ্ঠান হতে যাচ্ছে। এর আগে ১৯৮৫ সালে তীব্র শীতের কারণে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগ্যানের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানও রোটুন্ডায় সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল।
বৃহৎ জনসমাগম এড়ানোর লক্ষ্যে এবার অনুষ্ঠানে অতিথি সংখ্যা সীমিত রাখা হয়েছে। তবে এটি নিয়ে রাজনৈতিক মহলে নানা আলোচনা চলছে।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিষেক অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিশ্ব নেতাকে। তবে আমন্ত্রণ তালিকা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। কট্টর ডানপন্থি ও জাতীয়তাবাদী রাজনীতিবিদদের আমন্ত্রণ জানালেও বাদ পড়েছেন কিছু বড় নেতারা।
আমন্ত্রিতদের মধ্যে রয়েছেন ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি, আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট জেভিয়ার মিলেই, এবং হাঙ্গেরির প্রেসিডেন্ট ভিক্তর অরবান। তবে ভিক্তর অরবান জানিয়েছেন, তিনি অনুষ্ঠানে থাকতে পারবেন না।
এছাড়া চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনালাপে শি জিনপিং তাকে পুনরায় প্রেসিডেন্ট হওয়ার জন্য অভিনন্দন জানিয়েছেন এবং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করেছেন।
অবাক করার মতো বিষয় হলো, আমন্ত্রণের তালিকায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নাম নেই। তবে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন বলে জানা গেছে।
শুক্রবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে মোদিকে আমন্ত্রণ না জানানো নিয়ে প্রশ্ন করা হলে মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বিষয়টি এড়িয়ে যান।
ট্রাম্পের শপথ অনুষ্ঠানের স্থান পরিবর্তন এবং আমন্ত্রণ তালিকা নিয়ে মার্কিন রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। কট্টর ডানপন্থিদের প্রাধান্য দেওয়া এবং ভারতের মতো গুরুত্বপূর্ণ অংশীদারকে উপেক্ষা করার বিষয়টি বিশেষভাবে নজর কেড়েছে।
তবে তীব্র ঠাণ্ডার কারণে আয়োজনের স্থান পরিবর্তনের বিষয়টি বেশিরভাগ নাগরিক স্বাভাবিকভাবে নিয়েছেন। অনুষ্ঠানের দিন প্রায় হিমশীতল তাপমাত্রা থাকার পূর্বাভাস রয়েছে।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয় দফা দায়িত্ব গ্রহণের এই আয়োজন শুধু যুক্তরাষ্ট্র নয়, গোটা বিশ্বে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। এখন দেখার বিষয়, তার নতুন প্রশাসন কীভাবে দেশ ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক পরিচালনা করে।